ডিস্ক প্রোলাপস ও মেরুদণ্ডে আঘাত: কারণ, লক্ষণ ও করণীয়
ডিস্ক প্রোলাপস কী?
ডিস্ক প্রোলাপস হলো মেরুদণ্ডের হাড়গুলোর (ভার্টিব্রা) মাঝে থাকা নরম জেলির মতো ডিস্কের স্থানচ্যুতি বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। এটি সাধারণত কোমর (লাম্বার) বা ঘাড়ের (সার্ভাইকাল) অংশে বেশি দেখা যায়।
ডিস্ক প্রোলাপসের কারণ
- বয়স বৃদ্ধির ফলে ডিস্কের স্থিতিস্থাপকতা কমে যাওয়া
- ভারী ওজন তোলা বা ভুল ভঙ্গিতে কাজ করা
- দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা বা একটানা দাঁড়িয়ে কাজ করা
- হঠাৎ ধাক্কা বা আঘাত পাওয়া
- মেরুদণ্ডের গঠনগত সমস্যা বা জন্মগত দুর্বলতা
ডিস্ক প্রোলাপসের লক্ষণ
- পিঠ বা ঘাড়ে তীব্র ব্যথা
- হাত বা পায়ে অবশভাব বা ঝিনঝিন করা
- পেশির দুর্বলতা ও নড়াচড়ায় অসুবিধা
- দীর্ঘ সময় বসে থাকলে ব্যথা বৃদ্ধি পাওয়া
- গুরুতর ক্ষেত্রে প্রস্রাব বা পায়খানার উপর নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়া
মেরুদণ্ডে আঘাত কী?
মেরুদণ্ডে আঘাত হলে স্পাইনাল কর্ড বা স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে, যা সাময়িক বা স্থায়ী শারীরিক অক্ষমতা সৃষ্টি করতে পারে। এটি সাধারণত দুর্ঘটনা, পতন, ক্রীড়া বা ভারী আঘাতের ফলে হয়।
মেরুদণ্ডে আঘাতের কারণ
- গাড়ি দুর্ঘটনা
- উচ্চ স্থান থেকে পড়ে যাওয়া
- খেলাধুলায় আঘাত পাওয়া
- মারাত্মক আঘাতজনিত ট্রমা
মেরুদণ্ডে আঘাতের লক্ষণ
- পিঠ বা ঘাড়ে তীব্র ব্যথা
- হাত-পায়ে অবশ বা নড়াচড়ায় অক্ষমতা
- ভারসাম্য হারানো বা দুর্বলতা অনুভব করা
- প্রস্রাব বা মলত্যাগে সমস্যা
কী করবেন? (চিকিৎসা ও প্রতিরোধ)
✔ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন – ব্যথা তীব্র হলে দেরি না করে চিকিৎসা নিন। ✔ ব্যথা কমানোর জন্য ফিজিওথেরাপি করুন – হালকা ব্যায়াম ও থেরাপি কার্যকর হতে পারে। ✔ সঠিক ভঙ্গিতে বসুন ও দাঁড়ান – দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করলে মাঝে মাঝে বিরতি নিন। ✔ ভারী ওজন তুলতে সতর্ক থাকুন – সঠিক ভঙ্গিতে ওজন তুলুন ও অতিরিক্ত চাপ এড়িয়ে চলুন। ✔ শরীরচর্চা করুন – নিয়মিত ব্যায়াম করলে মেরুদণ্ডের নমনীয়তা বজায় থাকে। ✔ সার্জারি প্রয়োজন হলে সিদ্ধান্ত নিন – গুরুতর ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে অস্ত্রোপচার লাগতে পারে।
শেষ কথা
ডিস্ক প্রোলাপস বা মেরুদণ্ডের আঘাত জীবনকে কঠিন করে তুলতে পারে, তবে সচেতনতা ও সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ করলে সুস্থ থাকা সম্ভব। ব্যথা বা কোনো উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।